বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থান: সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের ঘোষণা

 **বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থান: সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের ঘোষণা**  


**ঢাকা, ১৮ মার্চ ২০২৫:** গভীর রাতে আকস্মিকভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের শাসনক্ষমতা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। টেলিভিশন ও রেডিওতে এক জরুরি সম্প্রচারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেন। দীর্ঘদিন ধরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি রোধ করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।  


### **কীভাবে ঘটল অভ্যুত্থান?**  

সরকারবিরোধী আন্দোলন ও রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। সরকারবিরোধী দলগুলোর লাগাতার আন্দোলন, অর্থনৈতিক সংকট, এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সেনাবাহিনীকে হস্তক্ষেপে বাধ্য করেছে বলে অভ্যুত্থানের ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।  


মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সেনাবাহিনী রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, প্রধান সরকারি ভবন এবং রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার কেন্দ্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। ঢাকার রাস্তায় ব্যাপকসংখ্যক সেনাসদস্য টহল দিচ্ছে, এবং দেশজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।  


### **সেনাবাহিনীর ঘোষণা**  

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে—  

*"দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। সাময়িকভাবে সংবিধান স্থগিত করা হয়েছে এবং দেশ পরিচালনার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। খুব শিগগিরই জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে নতুন শাসন কাঠামো ঘোষণা করা হবে।"*  


### **সাবেক সরকারের প্রতিক্রিয়া**  

সেনা হস্তক্ষেপের পরপরই বিদায়ী সরকারের শীর্ষ নেতাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অভ্যুত্থানের পর কয়েকজন উপদেষ্টাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।  


এক অনানুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের একজন উপদেষ্টা বলেন—  

*"এটি গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত। আমরা জনগণের রায় মেনে নিয়েছি, কিন্তু এই সেনা হস্তক্ষেপ দেশের রাজনীতিতে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে।"*  


### **রাজনৈতিক নেতাদের অবস্থান**  

বিরোধী দলের নেতারা সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বিরোধী জোটের প্রধান বলেন—  

*"দেশের জনগণ চরম দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্তি চেয়েছিল। সেনাবাহিনী জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাই, তারা দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুক।"*  


### **সাধারণ জনগণের প্রতিক্রিয়া**  

সেনা হস্তক্ষেপের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাস্তাঘাট অনেকাংশে ফাঁকা হয়ে গেছে, ব্যাংক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। অনেকেই এটিএম বুথে গিয়ে টাকা তুলতে ভিড় করছেন, সুপারমার্কেটগুলোতে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন।  


কিছু সাধারণ নাগরিক সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও, অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক ব্যবসায়ী বলেন—  

*"অস্থিরতা চলছিল, কিন্তু আমরা জানি না সামরিক শাসনের ফলে কী হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের কী হবে, মানুষের জীবনে কী প্রভাব পড়বে?"*  


### **আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া**  

বাংলাদেশে সামরিক হস্তক্ষেপের খবরের পর আন্তর্জাতিক মহল থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন পুনর্বহালের আহ্বান জানানো হয়েছে।  


যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক বিবৃতিতে বলেছে—  

*"আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষে। সেনাবাহিনীর উচিত দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা।"*  


### **পরবর্তী পদক্ষেপ কী?**  

সেনাবাহিনী বলেছে, তারা খুব দ্রুত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে গণতান্ত্রিক একটি সরকার গঠন করবে, যা দেশের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবে। তবে, এই শাসন কতদিন স্থায়ী হবে এবং তারা কীভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে, সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।  


বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিক শাসন বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি দেশকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।  


-

Post a Comment

Previous Post Next Post