প্রতিবেদন: গণ-অভ্যুত্থানের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যু – একটি যুগের অবসান

 


প্রতিবেদন: গণ-অভ্যুত্থানের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যু – একটি যুগের অবসান

প্রকাশকাল: ১৬ জুন ২০২৫

স্থান: ঢাকা, বাংলাদেশ


ভূমিকা

১৬ জুন ২০২৫ — বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি কালো দিন। দীর্ঘদিন দেশের শাসনক্ষমতায় থাকা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

তিনি ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে দেশের অভ্যন্তরে সংঘটিত এক গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশত্যাগে বাধ্য হন এবং ভারত সরকারের আশ্রয়ে গোপনে বসবাস শুরু করেন। আজ তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নেমে এসেছে গভীর শোক ও আলোচনার নতুন অধ্যায়।


গণ-অভ্যুত্থান ও দেশত্যাগ

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নাটকীয় মোড় নেয়। ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি, দমননীতি, জ্বালানি সংকট ও গণতন্ত্র সংকটে বিরক্ত হয়ে জনগণের ক্ষোভ চরমে পৌঁছায়। দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা পরে রূপ নেয় গণ-অভ্যুত্থানে।

অবশেষে, সেদিন রাতেই শেখ হাসিনা বিশেষ বিমানে দেশত্যাগ করেন। ভারত সরকার তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়। জনসাধারণ ও আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে নানান আলোচনা চলতে থাকে, তবে সরকারিভাবে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।


ভারতে নির্বাসিত জীবন ও মৃত্যু

দেশত্যাগের পর শেখ হাসিনা ভারতের একটি গোপন স্থানে অবস্থান করছিলেন বলে জানা যায়। রাজনৈতিক ও শারীরিকভাবে তিনি তখন বেশ দুর্বল ছিলেন। আশ্রয়কালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল দিল্লির একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে।

আজ স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ১০ মিনিট) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত রোগ ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু ঘটে। তাঁর মৃত্যুর খবর প্রথমে ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করে, পরে তা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র।


রাজনৈতিক জীবন ও নেতৃত্ব

শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৬–২০০১ এবং ২০০৯–২০২৪ পর্যন্ত। তাঁর নেতৃত্বে দেশ অভূতপূর্ব অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ বেয়ে এগিয়ে যায়।

তবে শেষ সময়ের শাসনামল ঘিরে অভিযোগ ও বিতর্ক ছিল প্রবল। বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে দেশ-বিদেশে উদ্বেগ ছিল স্পষ্ট।


জনপ্রতিক্রিয়া ও শোক

তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সাধারণ মানুষ এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে কেউ কেউ শোক প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ কেউ তাঁর শাসনামল নিয়ে সমালোচনাও করেছেন।


Post a Comment

Previous Post Next Post